নারী অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের গ্র“প পর্বের লড়াইয়ে প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষকে হারিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল বাংলার মেয়েরা। এরপর গ্র“পের তিনে ম্যাচে তিন জয় নিয়ে গ্র“প চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার সিক্সে পা রাখে টাইগ্রেসরা। তবে সুপার সিক্সের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে সমীকরণ কঠিন করে ফেলে বাংলার মেয়েরা।
প্রথমবারের মত আয়োজিত নারী অনুর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তবে রান রেটে পিছিয়ে থাকায় সুপার সিক্স থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে বাংলাদেশের কিশোরীদের।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আমিরাত। প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট নেন মারুফা আক্তার। কিন্তু তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৩২ রান উঠার পর বাংলাদেশের সেমির স্বপ্ন ভেঙে যায়। কারণ আমিরাতকে ৪০ রানের আগেই অলআউট করতে পারলেই সেমির আশা বেঁচে থাকতো দিশা বিশ্বাসের দলের।
আর বাংলাদেশ আগে ব্যাট করলে করতে হতো ২০০ রান এবং আমিরাতকে থামাতে হতো ৪০ রানে। অর্থাৎ জয়ের ব্যবধান হতে হতো ১৬০ রান। তাহলেই অজিদের পেছনে ফেলে প্রথমবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে পারতো বাংলার বাঘিনীরা।
যেহেতু বাংলাদেশ পরে ব্যাট করেছে তাই নেট রানরেটে অস্ট্রেলিয়ার (+২.২১০) চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আগেই শেষ হয়ে যায়। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের ধাক্কায় চার ম্যাচের তিনটিতে জিতেও সেমির স্বপ্নও হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। সুপার সিক্সে একই গ্র“পে খেলা ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা আগেই ৪ ম্যাচ করে খেলে ৬ পয়েন্ট অর্জন করেছে। বাংলাদেশের পয়েন্টও সমান। কিন্তু ব্যবধান ওই রানরেটেই। বাংলাদেশ (+১.২১১) আমিরাতকে হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে (+০.৩৮৭) টপকে কেবল তিন নম্বরে উঠতে পেরেছে।
স্বপ্নভঙ্গ হলেও অবশ্য জ্বলে ওঠে বাংলাদেশের বোলাররা। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় আরব আমিরাত। দলীয় ৪ রানে জোড়া উইকেট হারায় তারা। তীর্থ সতীশ ৪ ও সামাইরা ধরনিধারকা রানের খাতা না খুলেই আউট হন। এরপর লাবণ্য কেনি ও মাহিকা গৌর মিলে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
তবে দলীয় ৩৬ রানে ২৭ বলে ১৭ রান আউটের পর ক্রিজে এসেই ফিরে যান ঈশিতা জেহরা। এরপর দলীয় ৬২ থেকে ৬৬ রানের মধ্যে আরও পাঁচ ব্যাটারকে হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৬৯ রান সংগ্রহ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দলের পক্ষে লাবণ্য কেনি সর্বোচ্চ ৪৬ বলে ২৯ রান করেন। বাংলাদেশের পক্ষে রাবেয়া খান ৩টি ও মারুফা আক্তার নেন ২টি উইকেট।
৭০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ওপেনার মিষ্টি শাহার উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর দলীয় ২১ ও ২২ রানে আরও দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৫ বলে ১৫ রান করে আফিয়া প্রত্যাশা ও ৩ বল খেলে রানের খাতা না খুলেই সুমাইয়া কাতার ফিরে যান সাজঘরে।
এরপর রাবেয়া খান ও স্বর্না আক্তার মিলে ৪৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের জয়ের ভীত গড়ে দেন। জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে রাবেয়া খান ও ১ রান দূরে থাকতে আউট হন স্বর্না আক্তার। রাবেয়া ১৩ বলে ১৪ ও স্বর্না ১৯ বলে ৩৮ রান করেন। শেষ পর্যন্ত উন্নতি আক্তার ও দিশা বিশ্বাস মিলে ৬৫ বল হাতে রেখে দলের জয় নিশ্চিত করেন। আরব আমিরাতের পক্ষে ইন্ধুজা নন্দকুমার ও সামাইরা ধরনিধারকা নেন ২টি করে উইকেট।